ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আদিত্য বিড়লা বাণীভারতী’র ৬৪ তম বার্ষিক অনুষ্ঠান ‘LUCENCY’আয়োজিত হলো সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহে….।

Spread the love

বিশেষ প্রতিনিধি : কলকাতা, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩। সোমবার মিলনের বাঁশির সুরে হৃদয় মোহিত করা এক অনুষ্ঠান উপহার দিল হুগলি জেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আদিত্য বিড়লা বাণীভারতী তার ৬৪ তম বার্ষিক অনুষ্ঠান ‘LUCENCY’ তে। গত সোমবার ২৭ নভেম্বর, কলকাতার সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহে। প্রতিষ্ঠানের পথপ্রদর্শক আদিত্য বিমো বিড়লাজী কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কান্ডারী মাননীয় অধ্যক্ষ শ্রী গৌতম সরকার ও কো -অর্ডিনেটর মাননীয়া শ্রীমতী সুচিস্মিতা দে মহাশয়ার নির্দেশনায় এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
এদিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেলুড় মঠের পরম শ্রদ্ধেয় স্বামী বেদাতীতানন্দ মহারাজ এবং  বিশিষ্ট অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী শ্রী সাহেব চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া কলকাতা ও তৎসংলগ্ন স্কুলের অধ্যক্ষ মহাশয়দেরও এই বার্ষিক দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষে সংবর্ধিত করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ মহাশয় এবং সমন্বয়কারী ম্যাডাম প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি মহোদয় স্বামী বেদাতিতানন্দজী মহারাজ এবং শ্রী সাহেব চট্টোপাধ্যায়কে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং সকলে একসাথে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এরপর প্রদীপের দীপ্তি এবং উদ্বোধনী নৃত্যের ছন্দ সমগ্র প্রেক্ষাগৃহকে উদ্দীপনায় ভরিয়ে তোলে।
তবে শুধু নৃত্যের তালেই ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দীপিত করা নয় বরং পূজনীয় ব্যক্তিত্ব শ্রী বেদাতিতানন্দ মহারাজের অসাধারণ বক্তৃতা ছাত্র ছাত্রী সহ সকলের মনকে নাড়া দিয়ে যায়। মানব জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত অনেক গুরুগম্ভীর বিষয়কে তিনি অত্যন্ত সহজভাবে এবং হাস্যরসের মাধ্যমে সকল ছাত্র-ছাত্রীর সামনে তুলে ধরেন। এমনকি ছাত্র জীবনের প্রধান লক্ষ্য যে সময়ানুবর্তিতা সেই বিষয়টিকেও তিনি নানা ঘটনা উল্লেখের মধ্য দিয়ে তিনি পড়ুয়াদের সামনে এমন ভাবে তুলে ধরেন যে তা শুধু ছাত্র ছাত্রীদেরই নয় উপস্থিত সকল দর্শকেরই পরম উপভোগ্য বিষয় হয়ে ওঠে। একদিকে যখন স্বামীজীর মনোমুগ্ধকর বক্তৃতায় পড়ুয়ারা মুগ্ধ অন্যদিকে তখন মঞ্চে আহবান করা হয় সাহেব চট্টোপাধ্যায় কে। আজ তিনি একজন সফল ব্যক্তিত্ব। কিন্তু এই সফলতা যে একদিনে আসেনি, জীবনের নানা কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়ে জীবনের সকল চাওয়া পাওয়া গুলোকে কিভাবে তিনি অর্জন করেছেন তাঁর জীবনের সেই গল্পও তিনি পড়ুয়াদের সামনে তুলে ধরেন। বক্তৃতা দীর্ঘায়িত না করে এক দুই কলি গানের সুরের মূর্ছনায় তিনি দর্শকদের মনোবাসনা পূরণ করেন।


শহর কলকাতার দূরবর্তী মফস্বল শহর রিষড়ায় অবস্থিত আদিত্য বিড়লা বাণীভারতী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের কলকাতার সায়েন্সসিটির প্রেক্ষাগৃহে বার্ষিক অনুষ্ঠানপালন কিভাবে সম্ভবপর হয়ে ওঠে তা মাননীয় অধ্যক্ষ মহাশয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন নিবিড়ভাবে অনুধাবন করলেই বুঝতে পারা যায়। পড়ুয়াদের সর্বাঙ্গীণ বিকাশোপযোগী শিক্ষা পরিবেশদান, বিদ্যালয়ের আগামীর পথ মসৃণ করে তুলছে প্রতিনিয়ত। আদিত্য বিড়লা বাণীভারতীর মূল লক্ষ্যই শিক্ষার্থীদের সমগ্রতার বোধে উদ্বোধিত করা। পাঠক্রমিক নানা ধরনের কার্যাবলীর সঙ্গে সঙ্গে সারা বছর ধরে একাধিক কর্মশালার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের জীবনমুখী শিক্ষায় নিরন্তর কীভাবে প্রশিক্ষিত করে চলেছে এই বিদ্যালয় তার এক সংক্ষিপ্ত বিবরণ আমরা পাই বিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনে। অনুষ্ঠানে বাণীভারতীর শিক্ষার্থীরা একসাথে নতুন দুনিয়া গড়ার যে অঙ্গীকার নিতে চলেছে সেই স্বপ্নবুননে সবসময়ই এমনকি করোনা কালেও তাদের পাশে থেকেছে তাদের বিদ্যালয়।। তাইতো, করোনার মতো অতিমারীর সময় থেকে আজও এই বিদ্যালয় পরিবারের সদস্য সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। সকলের জন্য বিদ্যালয় ভবনের তিনতলার নির্মাণ কার্য অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে।
অন্যান্য বছরের মতো বর্তমান বছরেও অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা তাদের নিজস্ব শিল্প দক্ষতা প্রদর্শন করল।
এবারের অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল মূলত দুটি। প্রথমে আদিত্য বিড়লা বাণীভারতীর ছোট্ট বন্ধুরা কিট্টর স্বপ্নপুরীতে বিচরণ করে দর্শকদের মোহিত করে দেয় তাদের অনুষ্ঠানে। তারপর অনুষ্ঠিত হয় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় আকর্ষণ নাট্যকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় নৃত্যনাট্য চন্ডালিকা’র অনুসরণে নির্মিত একটি নৃত্যনাট্য।

চির পরিচিত প্রকৃতি এবং প্রকৃতির মাকে এক বিশিষ্ট বার্তাবাহিকা রূপে আমরা দেখি এই নৃত্যনাট্যে। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং বর্ণাঢ্যভাবে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সমাজের অগ্রগতির পরিপন্থী বর্ণভেদ প্রথাকে মুছে দিয়ে সকল ধর্মের শ্রেষ্ঠ ধর্ম মানবতা প্রতিষ্ঠাই যে সর্বোত্তম- এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয় সকলের কাছে।
মানবকল্যাণ ও সমাজ প্রগতি সূচক রূপকে ফুটিয়ে তুলতে ইংরেজি, হিন্দি ও বাংলা- এই ত্রিভাষার সংমিশ্রণে নাচ, গান ও কবিতার এক সুন্দর মেলবন্ধন ঘটেছে এই অনুষ্ঠানে। সাম্যের গানের সুরের দোলায় দোলায়িত এই নৃত্যনাট্যটি দর্শকদের মনকেও নাড়া দিয়ে যায়। শুধু তাই নয়, আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক কৃষ্ণের দশাবতার রূপকে মঞ্চসজ্জায় অভিনবভাবে তুলে ধরে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে। বিদ্যালয়ের আদর্শকে সমুন্নত রাখতে অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে বিদ্যালয়ের সংগীত পরিবেশন করা হয়। সবশেষে বলা যায়, শীতের শুরুতে ২৭ শে নভেম্বর আদিত্য বিড়লা বাণীভারতী বিদ্যালয় এক সুন্দর ও সুপরিকল্পিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের এক আনন্দঘন বিকাল উপহার দিল।।

More From Author

Paschim Bangiya Marwari Sammelan ShikshaKosh Celebrates 34th Stipend Presentation Ceremony, Pledging Educational Empowerment….

देश की प्रतिष्ठित साहित्यिक-सांस्कृतिक संस्था नीलांबर का वार्षिकोत्सव ‘लिटरेरिया’ इस वर्ष 1 से 3 दिसम्बर 2023….।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *