নিজস্ব প্রতিনিধি : হাওড়া, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে যোগচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরতে গত ১৪ ডিসেম্বর, রবিবার, হাওড়া ময়দানের নিকটবর্তী রামগোপাল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক রাজ্যস্তরীয় যোগ প্রতিযোগিতা। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দেবলোক সোশিও-কালচারাল ফাউন্ডেশন, সহযোগিতায় ছিল মন্মথপুর প্রণব মন্দির, UCMAYPSF, Yogam এবং হাওড়া সংস্কৃত সাহিত্য সমাজ।
এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য ছিল জনসাধারণ ও যুবসমাজের মধ্যে যোগের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতা তুলে ধরা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের স্বামী দিব্যজ্ঞানানন্দজি, যিনি দৈনন্দিন জীবনে যোগচর্চার গুরুত্ব ও মানসিক-শারীরিক সুস্থতায় এর ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আচার্য অনুভব হাজরা, দেবলোক সোশিও-কালচারাল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান উদ্যোক্তা, সুজয় চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক ও এইচ. কে. মিডিয়া ইনফোটেইনমেন্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা, ইন্দ্ররূপ রায়চৌধুরী, জুনিয়র সায়েন্টিস্ট ও UCMAYPSF-এর প্রধান এবং ড. শঙ্কর স্যান্যাল, হরিজন সেবক সংঘের সভাপতি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত একাধিক বিচারক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এই অনুষ্ঠানের মর্যাদা বাড়ান।
জাতীয় স্তরে পরিচিত যোগ নেতা ইন্দ্ররূপ রায়চৌধুরী এই প্রতিযোগিতায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলা থেকে আগত প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণ। শিশু থেকে শুরু করে প্রবীণ—সব বয়সের মানুষ এই যোগ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
প্রতিযোগিতাটি পুরুষ ও মহিলা বিভাগে বয়সভিত্তিক মোট সাতটি গ্রুপে বিভক্ত ছিল। প্রতিটি বিভাগে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় আকর্ষণীয় পুরস্কার। মোট প্রায় ৭০০ জন প্রতিযোগী বিভিন্ন বয়সের শ্রেণিতে অংশগ্রহণ করেন।
এই রাজ্যস্তরীয় যোগ প্রতিযোগিতা দেখতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে দু’হাজারেরও বেশি দর্শক উপস্থিত ছিলেন। অভিভাবক, শিক্ষক, যোগপ্রেমী ও ক্রীড়ানুরাগীরা একত্রে এই যোগোৎসবের সাক্ষী হন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, শুধু বিজয়ীরাই নন—যাঁরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও স্থান অর্জন করতে পারেননি, তাঁদের জন্যও ছিল বিশেষ পুরস্কার ও উপহার, যা প্রতিযোগীদের উৎসাহ আরও বাড়িয়ে তোলে।
দেবলোক সোশিও-কালচারাল ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে সংস্কৃত ভাষা, গীতা, বেদ-উপনিষদ, যোগ ও ভারতীয় সংস্কৃতির প্রসারে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এই যোগ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সংগঠনের পক্ষ থেকে সমাজের কাছে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়—
“যোগ সবার জন্য এবং বয়স ও লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলেই যোগচর্চার মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন।”
যোগচর্চার মাধ্যমে সুস্থ সমাজ গঠনের বার্তা নিয়ে এই রাজ্যস্তরীয় প্রতিযোগিতা হাওড়ায় এক অনন্য সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া উৎসবে পরিণত হয়।


