কল্যাণী বিশ্ব বিদ্যালয়ে মহাভারতচর্চা: যুদ্ধের আবহে শান্তির বার্তা….।

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি : কল্যাণী, ২৫ জুন: বিশ্বজুড়ে চলমান যুদ্ধের আবহের মধ্যেই সাহিত্য অকাদেমি এবং কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হল একদিনের মহাভারতচর্চা। এই তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক কল্লোল পাল, প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে। তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি গভীর অর্থবহ এক মন্তব্য করেন, “বিশ্বে গত কয়েক বছর ধরে যুদ্ধের যে আবহ চলছে, তা যেন মহাভারতেরই পুনরাবৃত্তি। কিন্তু আমরা আশা রাখব, আগামী দিনে তাই যুদ্ধ পর্ব শেষ হবে, ফিরে আসবে শান্তি পর্ব।” উপাচার্যের এই বক্তব্য বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে মহাভারতের প্রাসঙ্গিকতাকে নতুন করে তুলে ধরে।
মহাভারত সম্পর্কে একটি অতি পরিচিত প্রবাদ প্রচলিত আছে, যা এই মহাকাব্যের বিশালতা ও ব্যাপ্তি বোঝায়—‘যা নেই ভারতে, তা নেই ভারতে’। এই প্রবাদটি মূলত ইঙ্গিত করে যে, ধর্ম, অর্থ, মোক্ষ এবং কাম—জীবনের এই চতুবর্গের কথাই প্রথম বিস্তারিতভাবে শোনা যায় মহাভারতেই। এই মহাভারতচর্চা অনুষ্ঠানে মহাভারতের বিভিন্ন দিক, যেমন—এর জটিল চরিত্রগুলি, তৎকালীন সমাজব্যবস্থা, রাজনীতি, ভক্তি, এমনকি জীবজন্তুর ভূমিকা নিয়েও বিশদ আলোচনা করেন বিশিষ্ট পণ্ডিত ও গবেষকরা। আলোচকদের মধ্যে ছিলেন তমাল বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবীদাস আচার্য, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, নন্দিনী ভট্টাচার্য, দিব্যেন্দু মণ্ডল এবং শামিম আহমেদ। তাঁদের আলোচনা মহাভারতের বহুমুখী পাঠ ও বিশ্লেষণের সুযোগ করে দেয়।
সাহিত্য অকাদেমির অনুষ্ঠান আধিকারিক অভিষেক রথ এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান, “সাহিত্য অকাদেমি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছতে চাইছে এবং প্রসারিত করতে চাইছে ভারতীয় সাহিত্য এবং জ্ঞানচর্চার বিভিন্ন দিক। তাই ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যের ধারাগুলিকে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার তাগিদেই মহাভারতকে বেছে নেওয়া হয়েছে।” অভিষেক রথ আরও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, “এই উদ্যোগের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব সাহিত্য অকাদেমি কর্তৃপক্ষ, বাংলা উপদেশক পর্ষদ এবং তাঁর আহ্বায়ক শ্রী ব্রাত্য বসু এবং সহযোগী কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের।” এই আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনশোরও অধিক ছাত্রছাত্রী ও গবেষক সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়াও, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাজগতের বহু পরিচিত মুখ, যেমন—অধ্যাপক সাবিত্রী নন্দ চক্রবর্তী, অধ্যাপক নীলাদ্রি রঞ্জন চ্যাটার্জি, অধ্যাপক নন্দিনী ব্যানার্জি, অধ্যাপক সুখেন বিশ্বাস, অধ্যাপক হিমাংশু কুমার, অধ্যাপক বৈশালী হুই প্রমুখ। তাঁদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানটিকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে।

More From Author

Medella Karkinos Oncology Institute organizes CME on Advancements in Cancer Care…

স্মৃতির অলিন্দে একাকী – প্রবীর রায়…।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *