মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় ঘোষণা করলেন ছবি বিশ্বাসের পোস্টমর্টেম হবে না….।

Spread the love

প্রবীর রায় : প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা। কলকাতা, ১১ জুন, ২০২৫। ১১ জুন, ১৯৬২। লোকে লোকারণ্য আর জি কর হাসপাতাল। এত ভিড়, ঢোকা-বেরোনোর পথ সব বন্ধ। থিয়েটার, সিনে-দুনিয়ার সবাই আসছেন, ঢুকতে পারছেন না। উদ্বিগ্ন, থমথমে মুখের সারি। প্রশ্নের গুঞ্জন। কী হয়েছিল? কী ভাবে হল অ্যাক্সিডেন্ট? সাদা অ্যাম্বাসাডরটা নাকি তুবড়ে গিয়েছে? ড্রাইভার ছিল না? নিজে চালাচ্ছিলেন? মদ খেয়ে?

ডাক্তার না করলেও, মানুষ কি আর ছাড়ে কাটাছেঁড়া? বাতাসে ভাসে আশ্চর্য, বহুবর্ণ এক অভিনেতার ব্যবচ্ছিন্ন শব। কথা-বলা চোখ। দুই ভুরুর একটা তুলে, অন্যটা নামিয়ে আশ্চর্য কৌশলে ডায়ালগ বলতেন, সেই ভুরু। সংলাপের মাঝে ‘পজ’-কে অতুল শিল্পবস্তু বানিয়ে ফেলার সেই কণ্ঠ। বিশু, হারান, মাস্টারমশাই, রহমত, দাদাঠাকুর, বিশ্বম্ভর রায়, কালীকিঙ্কর, ইন্দ্রনাথরা বুঝি আজ ঢুকতে চেয়েও ঢুকতে পারছে না ওই ছ’ফুট, ঋজু শরীরটায়। বাংলা ছবির উত্তম-সুচিত্রা-সুপ্রিয়া-সাবিত্রী-সন্ধ্যার অজস্র কাহিনির আজ পিতৃবিয়োগের দিন!

মাত্র বাষট্টি বছরের জীবন। ১৯০০ সালে জন্ম নেওয়া মানুষটি বাংলা ছবিকে হাত ধরে পৌঁছে দিয়েছেন আধুনিকতার আঙিনায়, বললে ভুল হবে কি? আর মঞ্চের ছবি বিশ্বাসও তো শুধু পটে নয়, ইতিহাসেও লেখা। বাঙালিরা শিল্প নিয়ে কথা কইতে গেলে ‘যুগ’ শব্দটি বলতে বড় ভালবাসেন। রবীন্দ্র যুগ, অহীন্দ্র যুগ। সে কালের থিয়েটার-ভক্তরা বলেন, অহীন্দ্র চৌধুরী-শিশিরকুমার ভাদুড়ীর পর বাংলার মঞ্চে ছিল ছবি বিশ্বাস যুগ।

বারাসতের জাগুলিয়ায় জমিদারি ছিল দে বিশ্বাস পরিবারের। ‘দে’ পদবি, ‘বিশ্বাস’টা নাকি তাঁর পূর্বপুরুষ পেয়েছিলেন আকবর বাদশাহর কাছ থেকে। বাবা ভূপতিনাথ দে বিশ্বাসের চার ছেলের মধ্যে ছোট শচীন্দ্রনাথ। বয়স এক না পেরোতেই মায়ের মৃত্যু। প্রিয়দর্শন শিশুটিকে মা আদর করে ‘ছবি’ নামে ডাকতেন। সেই নামটাই রয়ে গেল আজীবন, ইতিহাসেও!

(ছবিতে- দূর্ঘটনাগ্রস্ত সেই গাড়ি)

More From Author

iLEAD Unveils Revolutionary Banquet-cum-Conference Hall Made from 90% Recycled Materials….

কয়লা ও খনি প্রতিমন্ত্রী সতীশ চন্দ্র দুবের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ…।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *