এভাবেও ফিরে আসা যায় :- ক্যান্সারজয়ীদের মঞ্চে জীবন ও সাহসের অভিনব উদযাপন মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’-নাটকে….।

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা, ১৩ই জুলাই, ২০২৫: “পৃথিবী এক বিরাট মঞ্চ, আর আমরা সবাই সেই মঞ্চের অভিনেতা”—উইলিয়াম শেক্সপিয়রের এই বিখ্যাত উক্তিকে বাস্তবে রূপ দিল মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল ও মেডিকা অঙ্কোলজি (মনিপাল হসপিটালস নেটওয়ার্ক-এর একটি ইউনিট)। অশোকনগর নাট্যায়নের সহযোগিতায়, তারা আয়োজন করল এক অভিনব নাট্য প্রদর্শনী—‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’, যেখানে মঞ্চে অভিনয় করলেন ক্যান্সারজয়ীরা।
নাটকটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঁচটি ছোট নাটক অবলম্বনে নির্মিত—‘ আর্য ও অনার্য, ‘নতুন অবতার’, ‘অন্ত্যেষ্টি সৎকার’, ‘অরসিকের স্বর্গপ্রাপ্তি’ এবং ‘স্বর্গীয় প্রহসন’। প্রযোজনাটি নির্দেশনা দেন খ্যাতিমান নাট্যব্যক্তিত্ব চন্দন সেন।
এই থিয়েটার প্রযোজনাটি শুধুমাত্র নাটক নয়, বরং ক্যান্সারজয়ীদের জীবনের সাহসিকতার প্রকাশ। ‘এভাবেও ফিরে আসা যায়’ নামে থিমটি আশার, সহনশীলতার ও জীবনের উদযাপন হিসেবে প্রতিফলিত হয়। নাটকে ক্যান্সারজয়ীদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেন প্রখ্যাত অভিনেতা ফাল্গুনী চ্যাটার্জী, শান্তিলাল মুখার্জী, মাসুদ আখতার, ঋত্বব্রত মুখার্জী ও আশোকনগর নাট্যায়নের নাট্যশিল্পীরা।
এই হৃদয়স্পর্শী সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন মেডিকা অঙ্কোলজির চিকিৎসকগণ—প্রফেসর (ড.) সুবীর গাঙ্গুলি, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও অ্যাডভাইজার, রেডিয়েশন অঙ্কোলজি এবং ড. সৌরভ দত্ত, ডিরেক্টর, মেডিকা অঙ্কোলজি ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট, হেড অ্যান্ড নেক অনকোসার্জারি।
চন্দন সেন বলেন, “রঙ্গ ব্যঙ্গ’ আমার জীবনের সবচেয়ে আবেগঘন নির্দেশনার অভিজ্ঞতা। নাটকটির ৬৬টি চরিত্রের মধ্যে ১৫-১৬টি আজ ক্যান্সারজয়ীদের হাতে। আমি চাই, বছরের শেষে সমস্ত চরিত্র ক্যান্সারজয়ীরাই অভিনয় করুক। এ মঞ্চ কেবল পারফর্ম করার জায়গা নয়, এটি আত্মপরিচয় ফিরে পাওয়ার লড়াই।”
প্রফেসর (ড.) সুবীর গাঙ্গুলি বলেন, “ক্যান্সার চিকিৎসা শুধু শরীরের নয়, মানসিক ও আত্মিক শক্তিকেও জাগ্রত করতে হয়। আজ আমাদের ক্যান্সারজয়ীরা যে অভিনয়ে তাঁদের যন্ত্রণা থেকে শক্তি তৈরি করলেন, তা দেখে আমি গর্বিত। মেডিকাতে আমরা বিশ্বাস করি, আরোগ্য মানে সার্বিক সুস্থতা।”
ড. সৌরভ দত্ত বলেন, “প্রত্যেক ক্যান্সারজয়ীর জীবনে এক সাহসিকতার অধ্যায় আছে। ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’-এর মাধ্যমে আমরা তাঁদের সেই অধ্যায় মঞ্চে তুলে ধরার সুযোগ দিয়েছি। মঞ্চে তাঁদের পারফরম্যান্স আমাকে আবেগে ভাসিয়ে দিয়েছে—কারণ তাঁদের অনেককেই আমি চিকিৎসা করেছি। এই অনুষ্ঠান জীবন ও সাহসের উদযাপন।”
আইসিএমআরের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ১৫.৭ লক্ষ, যা ২০২২ সালের ১৪.৬ লক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। বিশ্বজুড়ে এই সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে পৌঁছাতে পারে ৩.৫ কোটি। এই ক্রমবর্ধমান সংকটের মাঝে, মনোবল ও মানসিক সুস্থতা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই জরুরি পারস্পরিক প্রেরণা। সেই উদ্দেশ্যে ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’ ছিল এক সাহসী ও মানবিক প্রচেষ্টা।
গৌতম রায়চৌধুরী, অমিতাভ সরকার ও মৌসুমি বন্দ্যোপাধ্যায়—তিনজন ক্যান্সারজয়ী অভিনেতা বলেন,
“এই মঞ্চ আমাদের কাছে যন্ত্রণাকে শক্তিতে রূপান্তরের জায়গা। ক্যান্সার আমাদের শরীরকে থামাতে চেয়েছিল, কিন্তু আমাদের মনের কণ্ঠকে নয়। এই নাটক আমাদের গর্বের সঙ্গে নিজেদের গল্প বলার সুযোগ দিয়েছে।”

ড. অয়নাভ দেবগুপ্ত, রিজিওনাল চিফ অপারেটিং অফিসার, মনিপাল হসপিটালস ইস্ট বলেন, “মানবিক আত্মা যেকোনো অসুস্থতার চেয়েও শক্তিশালী। আমরা বাতাসের দিক নির্ধারণ করতে পারি না, তবে পাল তুলে চলার পথ ঠিক করতে পারি। ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’ দেখিয়ে দিল, চিকিৎসা শুধু ওষুধে নয়, সহানুভূতি, সাহস ও সৃজনশীলতার মধ্য দিয়েও হয়। আমরা গর্বিত যে এই যোদ্ধাদের চিকিৎসা এবং সাহসিকতার অংশ হতে পেরেছি।”

More From Author

8th Corporate Car Treasure Hunt 2025 – The Only Corporate Motoring Event In India….

GRIPIT Powers Amazon Prime Day with Global Tech Innovations for Indian Consumers…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *